সফটওয়্যার কি
সফটওয়্যার (Software): সাধারণত সফটওয়্যার বলতে কম্পিউটারের প্রোগ্রামসমূহের সমষ্টিকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ সফটওয়্যার হলো কতকগুলো প্রোগ্রাম বা প্রোগ্রামের সমষ্টি, যা হার্ডওয়্যারকে কর্মক্ষম করে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কাঙিক্ষত ফলাফল প্রদান করে। সফটওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে কার্যোপযোগী করা হয়। DOS, Windows, MS Office, Adobe Photoshop, Vedio Player, Pagemaker ইত্যাদি হলো সফটওয়্যারের উদাহরণ।
সফটওয়্যারের শ্রেণি বিভাগ
Types of Software
সফটওয়্যারের ওপর কম্পিউটারের ক্ষমতা ও কাজের গতি অনেকাংশে নির্ভর করে। তবে বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটারের সফটওয়্যারকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা-
১। সিস্টেম সফটওয়্যার (System Software) ও
২। অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার (Application Software) বা ব্যবহারিক সফটওয়্যার
সিস্টেম সফটওয়্যার
System Software
সিস্টেম সফটওয়্যার হলো কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রক। এটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও ব্যবহারিক প্রোগ্রামের মধ্যে যোগসূত্র রচনা ও রক্ষা করে। সিস্টেম সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার অচল। তাই কম্পিউটারকে সঠিকভাবে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য যে সকল প্রোগ্রাম বা প্রোগ্রাম সমষ্টি দরকার তাদেরকে সিস্টেম সফটওয়্যার বলে। সিস্টেম সফটওয়্যার কম্পিউটারের বিভিন্ন ইনপুট-আউটপুট ডিভাইসের মধ্যে কাজের সমন্বয় রক্ষা করে ব্যবহারিক প্রোগ্রাম চালনার জন্য কম্পিউটারকে তৈরি রাখে। আবার কম্পিউটারের বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে কাজের সমন্বয় রক্ষা করে। DOS, Windows Xp, Linux, Unix, Mac OS, Solaries ইত্যাদি হলো সিস্টেম সফটওয়্যারের উদাহরণ। আবার Compiler, Interpretor, Assembler প্রোগ্রামসমূহও সিস্টেম সফটওয়্যারের অন্তর্গত।
সিস্টেম সফটওয়্যারকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১। সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট বা সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রাম (System Management or Control Program)
২। সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (System Development Program) এবং
৩। সিস্টেম সাপোর্ট প্রোগ্রাম (System Support Program)
সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট বা সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ প্রোগ্রাম
সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের সাহায্যে কম্পিউটার সিস্টেমের সকল অংশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। অর্থাৎ সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের সাহায্যে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, ডেটা, প্রোগ্রাম, বিভিন্ন ডিভাইস এবং নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আবার এ ধরনের প্রোগ্রাম কম্পিউটারের বিভিন্ন ডিভাইসের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে, ইনপুট অংশ হতে ডেটা গ্রহণ ও আউটপুট প্রদর্শন ইত্যাদি কার্যাবলি সম্পাদন করে। সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম নিমণলিখিত প্রোগ্রামের সমন্বয়ে গঠিত-
১. অপারেটিং সিস্টেম প্রোগ্রাম
২. ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম ও
৩. নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম
সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম
সাধারণত সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবহারিক সমস্যা সমাধান করা যায় এবং ব্যবহারিক প্রোগ্রাম উন্নয়ন করা যায়। আবার সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম ব্যবহার করে কম্পিউটারের নতুন প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার তৈরি করা যায় এবং সফটওয়্যার উন্নয়নের কাজও করা যায়। সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামকে সাধারণত নিমণলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ট্রান্সলেটর বা অনুবাদক
২. প্রোগ্রামিং এডিটর টুলস
৩. কম্পিউটার এইডেড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টুলস; ইত্যাদি।
সিস্টেম সাপোর্ট প্রোগ্রাম
সিস্টেম সাপোর্ট প্রোগ্রামের মাধ্যমে কম্পিউটার ব্যবহারকারীর সার্ভিস প্রোগ্রাম, নিরাপত্তা প্রদানের প্রোগ্রাম এবং কাজের হিসাব-নিকাশ ইত্যাদি কাজ সম্পাদন করা হয়। আবার কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণ, সফটওয়্যার ত্রম্নটিমুক্তকরণ ইত্যাদি প্রয়োজনেও সিস্টেম সাপোর্ট প্রোগ্রাম ব্যবহৃত হয়। সিস্টেম সাপোর্ট প্রোগ্রাম নিমণলিখিত প্রোগ্রামগুলো নিয়ে গঠিত-
১. সিস্টেম ইউটিলিটি প্রোগ্রাম
২. সিস্টেম পারফরম্যান্স প্রোগ্রাম ও
৩. সিস্টেম সিকিউরিটি প্রোগ্রাম
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার
Application Software
অ্যাপ্লিকেশন সফট্ওয়্যার কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারিক কাজের জন্য তৈরি হয়। কাজের প্রকৃতি অনুসারে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারিক প্রোগ্রাম তৈরি করা হয়। তাই ব্যবহারকারী যে সকল সফটওয়্যার ব্যবহার করে ব্যবহারিক সমস্যা সমাধান বা ডেটা প্রক্রিয়াকরণের কাজ করতে পারে তাকে অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম বা ব্যবহারিক সফটওয়্যার বলা হয়। যেমন-
1| Word Processing Package Program: Word Star, Word Perfect, Ms-Word, Word Note.
2| Spreadsheet Package Program : Lotus 1-2-3, Ms-Excel, Qrater Pro.
3| Database Package Program: dBase, Foxpro, Oracle, Informix, Access ইত্যাদি।
অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১. সাধারণ ব্যবহারিক প্রোগ্রাম বা প্যাকেজ প্রোগ্রাম (General Application Program or Package Program) ও
২. অ্যাপ্লিকেশন সুনির্দিষ্ট প্রোগ্রাম বা কাস্টমাইজড প্রোগ্রাম (Application Specific or Customized Program)
সাধারণ ব্যবহারিক প্রোগ্রাম বা প্যাকেজ প্রোগ্রাম
বাণিজ্যিকভাবে সুনির্দিষ্ট কাজের জন্য তৈরীকৃত সফটওয়্যার বা প্রোগ্রামকে সাধারণ ব্যবহারিক প্রোগ্রাম বলা হয়। অর্থাৎ ব্যবহারিক সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন প্রস্ত্ততকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তৈরি যে সমসত্ম বাণিজ্যিক সফটওয়্যার পাওয়া যায় তাদেরকে সাধারণ ব্যবহারিক প্রোগ্রাম বা প্যাকেজ প্রোগ্রাম বলা হয়। যেমন- এমএসওয়ার্ড প্রোগ্রামের সাহায্যে ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ের কাজ করা যায়; এমএস এক্সেল প্রোগ্রামের সাহায্যে হিসাব-নিকাশের কাজ করা যায়; এমএস এক্সেস প্রোগ্রামের সাহায্যে ডেটাবেজ ব্যবস্থাপনার কাজ করা যায় ইত্যাদি। মূলত কম্পিউটার ব্যবহারকারীগণ সাধারণ ব্যবহারিক প্রোগ্রামের সাহায্যে প্রাত্যহিক সমস্যার সমাধান করে থাকেন। উলেস্নখযোগ্য সাধারণ অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামগুলো হলো এমএস অফিস, ইন্টারনেট এক্সপেস্নারার, নেটস্কেপ নেভিগেটর, নেটস্কেপ কমিউনিকেটর, ইলেকট্রনিক মেইল, পেজ মেকার, ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর ইত্যাদি।
অ্যাপ্লিকেশন সুনির্দিষ্ট প্রোগ্রাম বা কাস্টমাইজড প্রোগ্রাম
অ্যাপ্লিকেশন সুনির্দিষ্ট প্রোগ্রাম বা কাস্টমাইজড হলো কাজের ধরন ও সমস্যা অনুযায়ী ব্যবহারকারীর জন্য কোনো দক্ষ প্রোগ্রামার বা কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান দ্বারা বিশেষভাবে তৈরীকৃত প্রোগ্রাম। সমস্যার ধরন ও প্রকৃতি অনুসারে ব্যবহারকারী অ্যাপ্লিকেশন সুনির্দিষ্ট প্রোগ্রাম তৈরি হয়ে থাকে। যেমন- ব্যাংকিং কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকিং সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিস কমার্স, পেরোল সিস্টেম ইত্যাদি হলো অ্যাপ্লিকেশন সুনির্দিষ্ট প্রোগ্রাম। কাস্টমাইজড প্রোগ্রাম মূলত ব্যাংক, বীমা, হাসপাতাল ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
সফটওয়্যার আপডেট দিলে কি হয়
সফটওয়্যার আপডেট দিলে ইন্সলকৃত সফটওয়্যারে নতুন নতুন ফিচার ও অপশন সমূহ সংযুক্ত হয়। সফটওয়্যারের কার্যক্ষমতা অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়।
0 comments:
Post a Comment